বিজ্ঞপ্তি : প্রবাসী বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতি

 

প্রবাসী বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতি

আন্তর্জালিক আলোচনাচক্র

১-৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

বাংলা বিভাগ, জাকির হুসেন দিল্লি কলেজ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়

আন্তর্জাতিক বঙ্গবিদ্যা পরিষৎ

 

প্রস্তাবনা

প্রবাস মানব সভ্যতায় নতুন কিছু নয়। কিন্তু বিগত কয়েক শতাব্দীতে তার ব্যাপ্তি এবং গুরুত্ব বেড়েছে বহুগুণ। আজকের বিশ্বায়িত ভুবনের বাসিন্দাদের স্বেচ্ছায় বা বাধ্যতায় প্রবাসী হওয়া আগেকার দিনের থেকে অনেক বেশি নৈমিত্তিক ঘটনা আজ। পেশাগত কারণ তো বটেই, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনও লক্ষ লক্ষ মানুষকে রাতারাতি করে দেয় কখনও প্রবাসী আবার কখনও নিজভূমে পরবাসী। বাঙালি জাতির কথাই ধরা যাক। একদা ঘরকুণো অপবাদে ভূষিত এই বাঙালি স্বেচ্ছায় পেশাগত কারণে যেমন স্বভূমি ত্যাগ করে দেশান্তরী হয়েছে, তেমনই সহসা ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনও তাকে বাধ্য করেছে তা হতে। দেশভাগ বাংলার ভূখণ্ডকে করেছে খণ্ডিত। রাজনৈতিক পরিহাসের কারণে আজকের কোনো বাংলাদেশি বাঙালি যদি পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে এসে বসবাস করেন তবে তাঁকেও বলতে হয় ‘প্রবাসী’। এর বিপরীত ঘটলে তাঁকেও। অন্যদিকে, যে বাঙালিরা নানা প্রয়োজনে ভারতে অথচ বাংলার বাইরে এসে বসবাস করছেন তাঁরাও ‘প্রবাসী বাঙালি’ বলেই আখ্যায়িত। এক্ষেত্রেও তাঁরা ‘প্রবাসী’ হলেন ‘স্বদেশ’ ত্যাগ না করেই। তাঁদের বাস্তবতাকে আখ্যায়িত করতে তাই অনেকেই ‘বহির্বঙ্গ’ শব্দটি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তাতে তাঁদের প্রবাস জীবনের বাস্তবতার বিশেষ রূপটিই স্বীকৃতি পায়। আর যাঁরা স্বদেশ অর্থাৎ ভারত বা বাংলাদেশ ত্যাগ করে থাকেন পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে তাঁরা তো প্রবাসী বটেই।

এদানিংকালে, সাহিত্যচর্চা এবং বিদ্যায়তনিক পরিসরে ‘বহির্বঙ্গে বাংলা সাহিত্য’ বা ‘প্রবাসী সাহিত্য’ একটি চর্চিত বিষয়। তবে চর্চিত হলেও বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। যখন ‘প্রবাসী’ কাকে বলব তাই যখন বিতর্কের বিষয় তখন তা যুক্তিযুক্তও বটে। রাজনৈতিক কারণে দেশভাগের আগে ও পরে ঐতিহাসিক ভাবে বঙ্গভাষী যে অঞ্চলগুলি আজ আসাম বা ত্রিপুরার অংশ, সেখানকার বাঙালির জীবনকে কোন যুক্তিতে ‘প্রবাসী’ বা ‘বহির্বঙ্গীয়’ বলব? যদি তা হয় তবে মিজোরাম, গুয়াহাটি, দিল্লি, এলাহাবাদ, রাঁচি, পাটনা, ভাগলপুর ইত্যাদি ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে বসবাসকারী বাঙালিকে কী বলা যায়?  আবার, বাংলার বাইরে বসে যাঁরা সাহিত্যচর্চা করছেন, তাঁদের সাহিত্যকে প্রবাসী সাহিত্য বললে সতীনাথ ভাদুড়ী, বনফুল, রাজলক্ষ্মী দেবী এমনকি শরৎচন্দ্রের মতো সাহিত্যিকদের সাহিত্যকেও তাই বলতে হয়। অথচ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের বইগুলি সেকথা বলে না। এমনকি, পেশাগত কারণে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাষিক আবহে বিদেশে বসবাসকারী সাহিত্যিকদের রচনাকে যদি ‘প্রবাসী সাহিত্য’ আখ্যা দিতে হয় তবে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শক্তিশালী লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর রচনাকেও ‘প্রবাসী সাহিত্য’ বলে গণ্য করতে হয়। আমরা কি তাই করে থাকি? এভাবেই ‘প্রবাসী সাহিত্য’ শব্দবন্ধের একটু গভীরে গেলেই উঠে আসে হাজারতরো প্রশ্ন।

কিন্তু একথা অস্বীকার করা যাবে না যে এমনতরো বিতর্কের পাশাপাশিই রয়েছে প্রবাস জীবনের নানামাত্রিক বাস্তবতা ও তার অভিব্যক্তি। সেই বাস্তবতা এবং অভিব্যক্তিকে নিয়ে গবেষণাও চলছে।

এসব বিতর্ক, বাস্তবতা এবং অভিব্যক্তিকে ঘিরে নানা প্রশ্নের জন্ম দেওয়া এবং সম্ভব হলে তার উত্তর খোঁজার উদ্দেশ্যেই জাকির হুসেন দিল্লি কলেজ ও আন্তর্জাতিক বঙ্গবিদ্যা পরিষৎ-এর উদ্যোগে এই অতিমারি কবলিত সময়ে এই আন্তর্জালিক আলোচনাচক্রের প্রস্তুতি। নানা দৃষ্টিকোণ থেকে এই আপাতসরল অথচ জটিল একটি বাস্তবকে আরও ভালোভাবে বুঝে নেওয়ার ইচ্ছা থেকেই আমাদের এই প্রয়াস। আমাদের প্রত্যাশা, বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের সুচিন্তিত গবেষণাপত্র অনেক নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটাবে।

 

গবেষণাপত্র উপস্থাপনের সম্ভাব্য ক্ষেত্র

* বৃহৎবঙ্গ, বহির্বঙ্গ, প্রবাস : পারিভাষিক অনুসন্ধান

* প্রবাসে লিটল ম্যাগাজিনচর্চা

* প্রবাসী জীবনে বাংলা ভাষা

* প্রবাসী বঙ্গীয় সংগঠন

* প্রবাস-জীবন এবং বাংলা সংবাদপত্র

* প্রবাসে বাংলা সাহিত্যচর্চা ও তার মূল্যায়ন

* সাহিত্যের ইতিহাসে প্রবাসী বাংলা সাহিত্য চর্চার স্বীকৃতি ও অস্বীকৃতি

* ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে প্রবাসী বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চা

* ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে প্রবাসী বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চা

* প্রবাসী বাঙালির আত্মতার সংকট

* প্রবাসী বাঙালির ধর্মচর্চা

* রাজনীতিতে প্রবাসী বাঙালি

* জাতীয়তাবাদ ও প্রবাসীর আখ্যান

* আন্তর্জালে প্রবাসী বাঙালির উপস্থিতি

* বাঙালি নারীর প্রবাস-জীবন

* প্রবাসের অর্থনীতি

* প্রবাসী বাঙালির ভৌগোলিক বিন্যাস

* প্রবাসী বুদ্ধিজীবী বাঙালি

* প্রবাস এবং নাগরিকত্ব

* দেশীয় সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে প্রবাসী

* বাংলা বিদ্যাচর্চার পাঠক্রমে প্রবাসী সাহিত্যের অন্তর্ভুক্তি

 

নিবন্ধীকরণ

নিবন্ধীকরণের চাঁদা- ১০০০/- (ছাত্রদের ৫০০/-)

গৃহীত গবেষণাপত্রের লেখকদের নিবন্ধীকরণের যাবতীয় তথ্য সংক্ষেপসার সম্পর্কে সিদ্ধান্তের সঙ্গে  জানিয়ে দেওয়া হবে।

সংক্ষেপসার জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া

এক হাজার (১০০০) শব্দের সংক্ষেপসার জমা দেওয়ার শেষ দিন- ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০

বাংলা লেখা ‘অভ্র ইউনিকোড’-এ পাঠাতে হবে।

সংক্ষেপসার জমা করার জন্য মেইল আইডি: prabasi2020@gmail.com

সংক্ষেপসার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত জানানোর তারিখ- ৭-৯ জানুয়ারি, ২০২১

আন্তর্জাতিক বঙ্গবিদ্যা জার্নালের বিশেষ সংখ্যায় ছাপানোর জন্য লেখা পাঠানোর শেষ দিন- ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

অংশগ্রহণকারীদের আন্তর্জাতিক বঙ্গবিদ্যা জার্নালের বিশেষ সংখ্যা পাঠানোর সম্ভাব্য তারিখ- ২৮ এপ্রিল, ২০২১

 

আহ্বায়ক,

ড. শর্মিষ্ঠা সেন, জাকির হুসেন দিল্লি কলেজ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়

ড. অমিতাভ চক্রবর্তী, আধুনিক ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়

prabasi2020@gmail.com

 
 

     
     
     
     

    top